রাঙ্গুনিয়ায় ৬০ হাজারের বেশি পরিবার খাদ্য সহায়তা পেয়েছে -তথ্যমন্ত্রী। দৈনিক স্বদেশকণ্ঠ দৈনিক স্বদেশকণ্ঠ প্রকাশিত: ৪:২১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৫, ২০২০ রাঙ্গুনিয়ায় ৬০ হাজারের বেশি পরিবার খাদ্য সহায়তা পেয়েছে -তথ্যমন্ত্রী। এম. মতিন, চট্টগ্রাম। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি’র অনেক নেতা আছে, যারা ঘরের মধ্যে আইসোলেশনে থেকে শুধু প্রেস ব্রিফিং করে, আর সরকারের দোষ ধরে। জনগণের সহায়তায় তারা এগিয়ে আসেনি। সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরাই আছে মানুষের পাশে। তিনি বলেন, ‘যারা ঘরে বসে বসে শুধু সমালোচনা করছে, তারা কিন্তু ঘর থেকে বের হচ্ছেনা। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ ও সরকারের কেউ কিন্তু বসে নেই। আক্রান্ত হলে কি হতে পারে সেটিও আমি জানি, তাই আমি নিজেও বসে নেই। সব প্রস্তুতি নিয়েই কিন্তু মাঠে কাজ করছি। এই সময়ে দেশের মানুষ যখন আক্রান্ত, তখন হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোন কারণ নেই।’ দলীয় নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকার অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকার জন্য। আমরা নির্দেশনা মেনে জনগণের পাশে আছি, এবং ভবিষ্যতেও থাকবো। সেই কারণে আমাদের দলের বহু নেতা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। অনেক নেতা মৃত্যুবরণ করেছে। মৃত্যু যেকোন সময় হতে পারে, তাই বলে জনগণের এই দূর্দশার সময় বসে থাকবো সেটা হতে পারেনা।’ ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের মহামারি শুরুর পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে করোনা থেকে রক্ষা করার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন। মানুষকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য, যাতে খাদ্যের সঙ্কট না হয়, গরীব মানুষের যাতে কোনভাবে অনুবিধা না হয় সেজন্য নানাভাবে তিনি দিবানিশি কাজ করে যাচ্ছেন। ক্রমান্বয়ে দেশে করোনা ভাইরাস মোকাবেলার সামর্থ এবং সক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আজকে তিন মাসের বেশি দূর্যোগে বাংলাদেশে আল্লাহর রহমতে খাদ্যের অভাব হয়নি। খাদ্যের অভাবে কোন মানুষ মৃত্যুবরণ করেনি। খাদ্যের জন্য কোন জায়গায় হাহাকার নাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়ার ৬০ হাজারের বেশি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। এখনো সেই ত্রাণ কার্যক্রম চলমান আছে। এরবাইরে আমাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেও হাজার হাজার মানুষকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে। যতদিন এই পরিস্থিতি থাকবে, সরকার জনগণের পাশে আছে, এবং থাকবে।’ তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর হার পৃথিবীতে সর্বনিম্ম যে কয়টি দেশে আছে তৎমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশে এখন করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর হার ১.২৫ শতাংশ। ভারতে সেটি ৩ শতাংশের বেশি, পাকিস্তানে ২ শতাংশের বেশি। ইউরোপ আমেরিকার দেশ গুলোতে ৫ থেকে ১৬ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সাথে নিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করছেন বিধায় আমাদের দেশে মৃত্যুর হার অনেক দেশের চেয়ে কম।’ ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাতে করোনা রোগীদের সঠিক ভাবে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয় সেই লক্ষ্য নিয়ে কিছু কাজ হাতে নিয়েছি। ইতিমধ্যে সেখানে আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছে। আরো বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি করে অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জামের ব্যবস্থা করে সেটিকে শীততাপ নিয়ন্ত্রিতসহ আধুনিকায়ন করা হবে। এখন আমরা উপজেলা পর্যায়েও চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করছি। চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার ক্ষেত্রে যেসব অসুবিধাগুলো ছিল তৎমধ্যে অনেক অসুবিধাগুলো ইতিমধ্যে দুর করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ব্যবস্থা আরো ভাল হবে। আগের সঙ্কট ও হা-হুতাশ অনেকটা কেটে গেছে। নতুন ভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে, সেগুলো যাতে করোনা পরবর্তি স্বাভাবিক সময়েও ভালো মতে চিকিৎসা দেয়া যায় সেই লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশের উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সমস্ত স্বাস্থ্য সেবাকে ঢেলে সাজানোর কর্মসুচি সরকার হাতে নিয়েছে।’ সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়ায়ও অনেক করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে আমার সুরক্ষা আমার হাতে। আমি যদি সচেতন না হই সরকার কিংবা ডাক্তারসহ অন্য কেউ আমাকে সুরক্ষিত করতে পারবেনা। সেজন্য আমার সুরক্ষা আমার হাতে এটি মাথায় রেখেই আমাদেরকে করোনা ভাইরাসের সময় জীবন এবং কর্মকান্ড পরিচালনা করতে হবে। অসচেতন থাকলে যে কেউ যেকোন সময় আক্রান্ত হতে পারে।’ শনিবার (৪ জুলাই)২০২০ইং দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা অডিটরিয়ামে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি প্রদান ও বন্যহাতির আক্রমণে মৃত ব্যক্তির পরিবারের সরকারের আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, সহকারি পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রেহানুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর, মুজিবুল হক হিরু, উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবু তাহের প্রমূখ। অনুষ্ঠান শেষে তথ্যমন্ত্রী রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করে চিকিৎসা ব্যবস্থার খোঁজখবর নেন। এসময় তিনি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার আরো উন্নতি ও আধুনিকায়নকল্পে নানা উদ্যোগের কথা জানান। SHARES প্রচ্ছদ বিষয়: