গোপালপুর উপজেলার বই ব্যবসায়ীরা ভালো নেই।

প্রকাশিত: ১:৪৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১২, ২০২০

গোপালপুর উপজেলার বই ব্যবসায়ীরা ভালো নেই।


মো:অমিত হাসান, গোপালপুর :

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য দীর্ঘদিন ধরে সব ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায়, ভালো নেই টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার পুস্তক ও প্রকাশক ব্যবসায়ীরা।

সহায়ক বইয়ের চাহিদা কম থাকায় হাতে গোনা কিছু সৃজনশীল বই ছাড়া লাইব্রেরীর বেশিরভাগ সেলফ সাজানো হয়েছে স্কুল কলেজের খাতা, কাগজ-কলম ও দাপ্তরিক উপকরণ দিয়ে। আবার অনেক পুস্তক ব্যবসায়ী ব্যবসার ধরণ পাল্টিয়ে বিক্রয় করছেন ক্রীড়া সামগ্রী, বিয়ে-হালখাতার কার্ড, কসমেটিক্স ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। বেশকিছু বই ব্যবসায়ী চোখে-মুখে হতাশার চিহ্ন নিয়ে লাইব্রেরি বন্ধ করে যোগ দিয়েছেন অন্য পেশায়।

গোপালপুর থানা মার্কেটের প্রবীণ বই ব্যবসায়ী মো. কোরবান আলী এবং তারা মিয়া বলেন, সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বেচা বিক্রি নেই বললেই চলে। শুধু মাত্র ব্যবসাটি ধরে রাখার জন্য লাইব্রেরিটি চালু রেখে পরিবারপরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।

বিসমিল্লাহ লাইব্রেরীর স্বত্বাধিকারী ও বাপুস গোপালপুর শাখার সম্পাদক মির্জা সনি জানান, উপজেলার বইয়ের দোকানগুলো করোনা পূর্ববর্তী সময়ে অনেক জমজমাট ছিল। যা এখন অনেকটাই বিরানভূমি। আগে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত লাইব্রেরি খোলা রাখতাম। কিন্তু বইয়ের ব্যবসা মন্দাভাব থাকায় সপ্তাহে এক বা দুই দিন দোকান খোলা রাখি। বই ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এখন অনেক লাইব্রেরি মালিকের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গোপালপুর উপজেলা পাঠ্যপুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও মোহাম্মাদীয়া লাইব্রেরির পরিচালক সহ-অধ্যাপক কে এম শামীম বলেন, করোনাকালে ইতোমধ্যে অনেকগুলো পুরনো বইয়ের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো আছে তাও নিভুনিভু অবস্থায় টিকে আছে। অামরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে অায়করভূক্ত হলেও, সরকারের পক্ষ থেকে অামরা পুস্তক বিক্রেতারা এখন পর্যন্ত কোন রকমের সুযোগ সুবিধা পাইনি। যেখানে পার্শ্ববর্তী ভারতের পুস্তক ব্যবসায়ী ও প্রকাশকরা সরকারের নানাবিধ সুযোগসুবিধা পেয়ে থাকেন। দেশের শিক্ষাক্ষেত্র অংশীদারিত্বসহ ব্যাপকভাবে ভূমিকা পালন করা আমরা অসহায় বই বিক্রেতাগণ সরকারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা কামনা করছি।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার স্বার্থে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এরপর ছুটি বাড়ানো হয় দফায় দফায়। সর্বশেষ গত ১৫ জুন করোনা বিস্তারের পরিপ্রেক্ষিতে চলমান ছুটি বাড়িয়ে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।