কুষ্টিয়ার কৃষকরা এবার পাট চাষে ঝুঁকছেন।

প্রকাশিত: ৩:৩৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২০

কুষ্টিয়ার কৃষকরা এবার পাট চাষে ঝুঁকছেন।


কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।

গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এবারও কুষ্টিয়ার কৃষকরা পাট চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাটের চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

তবে কৃষকরা জানান, কয়েক বছর আগেও দাম পড়ে যাওয়ায় চাষিরা পাট চাষ ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে গত দুই-তিন বছর ধরে পাটের দাম ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে দেশ-বিদেশে পাটের চাহিদাও বেড়েছে। এভাবে দাম থাকলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে পাট চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের হাজরাহাটি এলাকার চাষি আব্দুল্লাহ বলেন, ‘গতবছর আমি দুই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। ভালো দাম পেয়েছিলাম। ১ হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার টাকা মণ পর্যন্ত বিক্রি করেছিলাম। দাম ভালো পাওয়ার কারণে এ বছর আমি চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পাটের রোগবালাই তেমন একটা নেই। পাটও বেশ ভালো হয়েছে। দাম ভালো পেলে লাভ হবে ভালোই।’

স্থানীয় পাট অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২ হাজার ২৭৮ একর জমিতে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া সদরে ৬ হাজার ৭৯২ একর, কুমারখালীতে ১২ হাজার ৩২৫ একর, খোকসায় ১০ হাজার ৬২১ একর, মিরপুরে ১৭ হাজার ৯২ একর, ভেড়ামারায় ৮ হাজার ৭০৬ একর এবং দৌলতপুর উপজেলায় ৪০ হাজার ৯৭৭ একর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।

গত বছর জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯০ হাজার ৫০০ একর জমি। সে বছর পাটের আবাদ হয়েছিল ৮৯ হাজার ৫৩৪ একর জমিতে। এ বছর পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে ৪ লাখ ২৪ হাজার ৬৫৪ বেল।

কুষ্টিয়া জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মামুন-অর-রশিদ জানান, গত বছর কৃষকরা সর্বশেষ ২৪০০-২৫০০ টাকা পর্যন্ত মণ হিসেবে পাট বিক্রি করেছেন। যখন পাট ওঠে তখনও ১৭০০-২২০০ টাকা পর্যন্ত দাম পেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা জেলার প্রায় এক হাজার ৮০০ পাট চাষিদের প্রণোদনা প্রকল্পের মাধ্যমে পাট বীজ, রাসায়নিক সার দেয়া হয়েছে। মূলত পাটের দাম ভালো হওয়ায় চাষিরা পাট চাষে বেশি আগ্রহী হয়েছেন।’

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ রঞ্জন কুমার জানান, এ বছর কুষ্টিয়া জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৪ হাজার ২৩৫ একর জমি। কিন্তু জেলার ৬টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে মোট পাটের আবাদ হয়েছে প্রায় ৯৬ হাজার ৫১৩ একর জমিতে।